Nageshwar Jyotirlingam
নাগেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ
নাগেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ শিবপুরাণে উল্লেখিত দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দিরের মধ্যে একটি।ধারণা করা হয় নাগেশ্বরই এরূপকার প্রথম মন্দির।
ঐতিহাসিকঃ
শিব পুরাণ মতে নাগেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গের অবস্থান ‘দারুকাবন’ নামক স্থানে, যা প্রাচীন ভারতের একটি বনের নাম।প্রাচীন কাব্যগ্রন্থগুলোতে দারুকবনের নাম পাওয়া যায় কাম্যকবন, দ্বৈতবন দন্ডকবন হিসেবে।
শিব পুরাণে নাগেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গের সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে এরূপ যে, ‘ দারুক নামে এক দৈত্য ছিল যে ভগবানের শিবের ভক্তদের ক্ষতি করত। তন্মধ্যে সুপ্রিয় নামে এক শৈব আরাধক ছিলেন যাকে দারুক দৈত্য অনান্য ভক্তদের সঙ্গে বন্দী করে তার রাজ্য দারুকবনে নিয়ে যায় যেখানে তাদের সে দৈত্য এবং সর্পের পাহাড়ায় রাখত। সুপ্রিয়ের জরুরী পরামর্শে, বন্দীরা সকলেই একত্রে পরমেশ্বর শিবের পবিত্র মন্ত্র জপ করতে শুরু করল এবং সেখানে তখন ভগবান শিব আবির্ভূত হলেন এবং দৈত্যকে তৎক্ষণাৎ ধ্বংস করলেন।পরবর্তীতে সেখানে জ্যোতির্লিঙ্গাকারে স্থাপিত হন।দৈত্যের স্ত্রী ছিলেন দারুকী যিনি মাতা পার্বতীর আরাধনা করেন।ফলে তার তপে ও ভক্তিতে সন্তুষ্ট হয়ে দেবী পার্বতী দারুকীকে সেই বনের অধিকর্তা করেন এবং তার ভক্তির সম্মানার্থে নামে সেই বনটিকে দারুকাবনে নামাঙ্কিত করেন।দারুকী যেখানাই যান সেখানেই সেই বন তাকে অনুসরণ করতে থাকে। ভগবান শিবের প্রকোপ থেকে দৈত্যদের রক্ষার জন্যে দারুকী দেবী থেকে প্রাপ্ত সকল ক্ষমতা এবং শক্তি দেবী পার্বতীকে ফিরিয়ে দেন। এরপর তিনি সম্পূর্ণ বনকে সমুদ্রের গহ্বরে স্থানান্তরিত করে এবং তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে সকল কর্ম অব্যাহত রাখে। ফলে সুপ্রিয় এবং অনান্য শিব ভক্তরা সেখানে আটকা পরল এবং তাতে করে মহান শিব ভক্ত সুপ্রিয় সেখানে আহত হলেন।
সুপ্রিয়-এর আগমনে এক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। তিনি সেখানে একটি লিঙ্গ তৈরী করে স্থাপন করেন এবং তিনি বন্দী শিব ভক্তদের ভগবান শিবের উদ্দ্যেশে “ওঁ নম শিবায়ঃ মন্ত্র জপ করতে বলেন যখন তিনি নিজে সেই লিঙ্গম্ এর পূজায় ব্যস্ত ছিলেন। সেই মন্ত্র উচ্চারণের শব্দ শুনতে পেয়ে দৈত্যরা সুপ্রিয়কে হত্যা করতে উদ্যত হল, যদিও তারা ভগবান শিবের আগমনে খর্ব হয়েছিল। পরবর্তীতে ভগবান শিব সুপ্রিয়কে একটি দৈব অস্ত্র প্রদান করেন যা দিয়ে সে নিজের প্রাণ রক্ষা করে।দারুকী এবং অনান্য দৈত্যরা পরাজিত হয় এবং দেবী পার্বতী বাকি দৈত্যদের রক্ষা করেন। সুপ্রিয় যে লিঙ্গম্ তৈরী করেন তাঁর নাম নাগেশ রাখা হয়, যা দশম লিঙ্গম্। শিব পুনরায় জ্যোতির্লিঙ্গের আকৃতি ধারণ করেন নাগেশ্বর রূপে এবং মাতা পার্বতী তখন থেকে নাগেশ্বরী রূপে পূজিতা হন। ভগবান শিব তখন বলেন যে ব্যক্তি তাঁর এই রূপের পূজা করবে তাকে তিনি নিজে সঠিক মার্গ প্রদর্শন করবেন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন